পদোন্নতি (Employees Promotion) ও বেতন বৃদ্ধি (Salary Hike), Child Care Leave প্রভৃতি নিয়ে দাবি তো অনেকদিন ধরেই রাজ্যের কাছে জানিয়ে আসছেন শিক্ষকরা। সেই নিয়ে এখনোও নড়েচড়ে বসেনি সরকার। যাতে বেশ ক্ষুব্ধ তারা। তবে এবার রাজ্য সরকার যে কাজ করল তাতে সেই ক্ষোভের আগুনে ঘি পড়ল আরো।
Child Care Leave for School Teachers
শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, শিক্ষক শিক্ষিকাদের এবার মাতৃত্বকালীন ছুটি (Child Care Leave) থেকে বঞ্চিত করতে শুরু করেছে রাজ্য। দত্তক সন্তান পালনের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটির আবেদন করা হয়েছিল ২০১৭ সালে। তাতে সম্মতি দিয়ে বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছিল অর্থ দপ্তর। কিন্তু শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে ‘ম্যাচিং অর্ডার’ প্রকাশ করতে সাত বছর সময় লেগে গেল। যার কারণে অনেকেই এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
হীরাপুর মানিকচাঁদ ঠাকুর ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষিকা নিবেদিতা আচার্য বলেছেন, “এই দীর্ঘ সময় পরেও সরকারের সাড়া পাওয়া দুঃখজনক। বর্তমান সমাজে দত্তক নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে এবং অনেক কর্মজীবী মহিলার সন্তান ধারণে সমস্যা হতে পারে, তাই তাদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
অর্থ দফতরের (Finance Department) অনুমোদনের পর শিক্ষা দফতর এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে দেরি হওয়ায় শিক্ষিকা এবং মহিলা শিক্ষাকর্মীরা তাদের প্রাপ্য ছুটি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী মন্তব্য করেন, “অর্থ দফতরের নোটিসের পরও শিক্ষা দফতরের ‘ম্যাচিং অর্ডার’ জারি করতে সাত বছর লেগেছে। এতে বহু শিক্ষিকা তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। পর্ষদে শিক্ষক প্রতিনিধি না থাকায় এই ধরনের অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে।”
শিক্ষা দফতরের কাজের চাপ বৃদ্ধি পাওয়ার পরও এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ নথি লম্বা সময় ধরে অমীমাংসিত থাকা উচিত নয়। নারায়ণ দাস বাঙুর মাল্টিপারপাস স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, “শিক্ষা দফতরের দেরি হওয়ার ফলে অনেক শিক্ষিকা তাদের প্রাপ্য ছুটি (Child Care Leave) থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কেন ‘ম্যাচিং অর্ডার’ দিতে দেরি হলো, তা বিবেচনা করা উচিত।”
আরও পড়ুন, পশ্চিমবঙ্গে আবার টানা ছুটি ঘোষণা। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুখবর।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, দত্তক সন্তানের বয়স ১৮ বছরের মধ্যে হতে হবে মাতৃত্বকালীন ছুটির জন্য। ২০১৭ সালে অনুমোদিত বিজ্ঞপ্তির আট বছর পরও কার্যকর না হওয়ায় অনেক শিক্ষিকার সন্তানের বয়স ইতিমধ্যে ১৮ বছর অতিক্রম করেছে। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “সাত বছর ধরে ‘ম্যাচিং অর্ডার’ না হওয়া শিক্ষাদফতরের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। অতীতে পিতৃত্বকালীন ছুটির ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছিল।”
এই পরিস্থিতিতে শিক্ষিকা এবং মহিলা শিক্ষাকর্মীদের প্রাপ্য অধিকার এবং ছুটি নিশ্চিত করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
Written by Nabadip Saha.