অনেকেই কোনো না কোনো নেশা করেন। এদের মধ্যে অনেকের পছন্দের নেশার জিনিস হল বিড়ি (Tobaco Bidi). বাংলায় বিড়ির জনপ্রিয়তা অনেকটা বেশিও বটে। কিন্তু হঠাৎ যদি এই বিড়ি পাওয়া বন্ধ হয়ে যায় বাজারে? কি হবে সুখটান প্রেমীদের! এই আশঙ্কাই সত্যি হতে চলেছে এবার। কেন বলছি একথা? বিড়ি বাধাইয়ের সঙ্গে নিযুক্ত বেশিরভাগ সমবায় সমস্ত গুলি এবার বন্ধের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে।
West Bengal Bidi Manufacturing Industry in Big Trouble.
বিড়ি শ্রমিকেরা আর বানাতে চাইছেন না বিড়ি। যার ফলে আগামীতে বিড়ি মেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিচ্ছে রাজ্যে।
সাধারণত জঙ্গলমহল এলাকার আদিবাসী ও তফসিল জাতির লোকেরা বিড়ি বাঁধাই এর সঙ্গে নিযুক্ত থাকেন। পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলা বিড়ি বাধাই এর (Bidi Industry In West Bengal) অন্যতম কেন্দ্র। এখানকার একটি বৃহৎ কুটির শিল্প বিড়ি বাঁধাই শিল্প। আগে হাজার হাজার মানুষ যুক্ত ছিলেন এই শিল্পের সঙ্গে।
বিস্তীর্ণ জঙ্গল গুলিতে কেন্দু গাছ থেকে পাতা তুলে সেই সব মানুষরা সরবরাহ করতেন বিভিন্ন সমবায় সংস্থা গুলিতে। সেখান থেকে কাঁচামাল যেত নিকটবর্তী কারখানা গুলোতে। সেখানেই হতো বিড়ি (Bidi) বাঁধাই এর কাজ। আবার অনেকেই চুক্তিভিত্তিকভাবে কারখানা গুলোর সঙ্গে কাজ করে বাড়িতেও বিড়ি নিয়ে গিয়ে বাঁধাই করতেন। বিড়ির (Bidi Demand) যথেষ্ট চাহিদা থাকায় সরকারও ভালো আর্থিক সাহায্য দিত এই জন্য। ফলে রুজি রুটি বজায় ছিল অনেক মানুষের।
কিন্তু সম্প্রতি এই শিল্পে দেখা দিয়েছে ভরাডুবি। বিগত কয়েক বছর ধরে বিড়ি তৈরির জন্য মিনিমাম সাপোর্ট প্রাইস দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। এদিকে সরকারি সাহায্যের অভাবে এই Bidi শিল্পের সঙ্গে যুক্ত অনেক শ্রমিক আর কাজ করতে চাইছে না। জঙ্গল থেকে কেন্দু পাতা তোলা কমিয়ে দিয়েছেন আদিবাসী লোকেরা। কাঁচামালের অভাব ঘটছে কারখানা গুলিতে।
বাইরে থেকে কাঁচামাল আমদানি হচ্ছে বটে। কিন্তু তাতে খরচ বেশি। এই দিকে আবার তার ওপর রয়েছে জিএসটি। ফলে লাভের তুলনায় উৎপাদন ব্যয় বহুল হওয়ায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কারখানা গুলিও। যারা এতদিন বিড়ি বাঁধাই এর (Bidi Making) সঙ্গে নিযুক্ত ছিলেন তারাও হারিয়েছেন নিজেদের কাজ। অন্যদিকে সমবায় সমিতি গুলোরও নির্বাচন না হওয়ায় পরিচালন কমিটি তৈরি হচ্ছে না।
ফলে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সেই সংস্থা গুলিও (Top Bidi Brands in India). যার ফলে বিড়ি বাঁধাই (Bidi Manufacturing) বর্তমানে সংকটের মুখে। অদূর ভবিষ্যতে এই জিনিস উঠে যেতে চলেছে বলে আশঙ্কা বিড়িপ্রেমীদের। বাঁকুড়ার বিজেপি নেতা সুভাষ সরকার বলেছেন, “আমরা অনেকদিন ধরেই বলেছি রাজ্যের এই তৃণমূল সরকার (TMC Government) আদিবাসী বিরোধী। বাঁকুড়ার অন্যতম বড় শিল্প হল বিড়ি বাঁধা সংগ্রহ। এই ব্যপারে রাজ্য এগিয়ে আসেননি।
রাজ্য সরকারের কো-অপারিটেভের উপর কোনও নজর নেই। এর ফলে আদিবাসী ভাইদের যথেষ্ঠ কষ্ট হচ্ছে।” স্থানীয় এক বিড়ি কারখানার (Bidi) ম্যানেজার অশোক গড়াই জানান, “বিড়ি শিল্প খুবই সঙ্কটে রয়েছে। এর অদূর ভবিষ্যত নেই। পাঁচ সাত হাজার মানুষ যুক্ত হবে। খুবই শোচনীয় অবস্থা। কারণ বিড়ি ব্যবসা করে আমাদের সংসার চলছে না। কাঁচামালের সংঙ্কট নেই। দাম বেড়ে গিয়েছে। অথচ বিড়ির দাম বাড়েনি।
আজ থকেই একাউন্টে ঢুকবে 1.30 লাখ টাকা। কারা পাবেন? অনলাইনে নামের তালিকা চেক করুন
এদিকে চলতি লোকসভা নির্বাচনে এই সংকট দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্থানীয় এলাকা থেকে অনেক প্রার্থীরা ভোটে দাঁড়িয়েছেন। ভোটে জিতলেই এই সমস্যার সমাধান তারা করবেন বলে জানিয়েছেন। আবার বিড়ি শিল্প ফিরে আসবে। তাদের কথায় খানিকটা আশ্বস্ত হয়েছেন এলাকাবাসী। কিন্তু কবে এই সংকট মিটবে সে সম্পর্কে আশঙ্কা পুরোপুরি যাচ্ছে না তাদের মন থেকে।
বিধিবদ্ধ সতর্কীকরনঃ
ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। Tobaco is injurious to health. এই প্রতিবেদনটি ধূমপান বিজ্ঞাপন বা প্রচারের জন্য নয়। এটি একটি খবর হিসাবে বিবেচ্য।
Written by Nabadip Saha.