ভারতজুড়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (CAA) কার্যকর হওয়ার পরপরই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল। বিশেষ করে মিজোরামে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশী শরণার্থীদের কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, সে প্রশ্ন উঠে আসছে। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা।
CAA act for Bangladeshi Refugee
লালদুহোমা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, CAA আবহে মিজোরামে আশ্রিত বাংলাদেশি শরণার্থীদের তাড়ানো সম্ভব নয়। তিনি মোদিকে অনুরোধ করেন যে কেন্দ্রীয় সরকারকে মিজোরামের বিশেষ পরিস্থিতি বুঝতে হবে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সাল থেকে মিজোরামে বাংলাদেশি শরণার্থীর সংখ্যা বেড়েছে লাগাতার। বর্তমানে সেখানে বাংলাদেশ থেকে আসা ‘জো’ জনগোষ্ঠীর মানুষের সংখ্যা প্রায় ২০০০ এর বেশি।
মিজোরামে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের মধ্যে রয়েছে কুকি চিন ন্যাশনাল আর্মি বা বম পার্টির সদস্যরাও। বাংলাদেশের রাঙামাটি, বান্দরবন-সহ নয়টি জেলাকে মিলিয়ে বম, পাংখুয়া, লুসাই, খুমি, ম্রো এবং খিয়াং জাতির জন্য পৃথক দেশের দাবি জানানো বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনটি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ। ২০২০ সালে ওই সংগঠনটির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে বাংলাদেশি সেনা। এরপর সেখান থেকে দলবদ্ধভাবে মানুষজন এসে মিজোরামে আশ্রয় নেন।
এছাড়াও, মিজোরামে বসবাসরত বম জাতির মানুষজনও রয়েছেন। তাঁদের ঘাড়ধাক্কা দিয়ে তাড়ানো সম্ভব নয় বলেই আগেও জানিয়েছিল মিজোরাম সরকার। লালদুহোমা এই অবস্থান পুনরায় তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা আরও জানান, আইজলের পূর্বদিকে অবস্থিত জোখাবসাংয়ে অসম রাইফেলসের শিবিরটিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার দাবি জানান। মিজোরামে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশি শরণার্থীদের জোর করে ফেরত পাঠানোর অভিযোগ করেছে স্থানীয় ‘জো রিইউনিফিকেশন অর্গানাইজেশন’ (ZORO)।
ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলিতেও এখনও প্রচুর লোকজন বাংলাদেশ থেকে ঢোকার চেষ্টা করছেন। মিজোরামও এর ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু মিজোরামের জাতিগত বন্ধন ও ঐতিহ্যের কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশি শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে বলেই মতামত ব্যক্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা।
আরও পড়ুন, পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য সাথী কার্ড চেক ও নিয়মাবলী। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এ কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে?
এই বৈঠকের পরে CAA নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং মিজোরামের শরণার্থীদের ভবিষ্যৎ কী হবে, সে দিকে নজর থাকবে সবার। আর শুধু তাই নয়, পশ্চিমবঙ্গে এই সংখ্যা সর্বাধিক বলে জানিয়েছে এক বেসরকারি সমীক্ষা সংস্থা। যদিও CAA লাঘু হওয়ার পরও রাজনৈতিক বা অজানা কারনে এখনও আবেদনে তেমন সাড়া মেলেনি বলে জানা যাচ্ছে।
আর ইতিমধ্যেই লোকসভা ভোটের আগেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী CAA NRC নিয়ে বার বার সরব হয়েছেন। তিনি বার বার বলেছেন, কাউকে তাড়ানো যাবে না। যাদের ভোটে প্রধানমন্ত্রী মখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের তাড়ানো যাবে না।
রাস্তার ধারে দোকান থাকলেই ১০০০০ টাকা দিচ্ছে সরকার। কিভাবে এই টাকা পাবেন, জেনে নিন
আর ইতিমধ্যে কতজন আবেদন CAA তে আবেদন করেছে সেই ব্যাপারেও পরিষ্কার পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়নি। তবে কেন্দ্র সরকার ইচ্ছে করলেই যে বাংলাদেশীদের তাড়িয়ে দিতে পারবে না, সেই ব্যাপারে ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই মিলতে শুরু করেছে বিভিন্ন রাজ্য থেকে।
তথ্য সুত্র সরকারি ওয়েবসাইট।