শিক্ষাবর্ষ শেষ হতে চলেছে। স্কুলে স্কুলে চলছে বার্ষিক পরীক্ষা যার জেরে কার্যত ছুটি বাতিল। অন্যদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকেরা টেস্ট পরীক্ষার খাতা দেখা, রেজাল্ট তৈরী এবং সেই সাথে স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার সমস্ত কাজকর্ম ও একসাথে করছেন।
পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলে, রেজাল্ট তৈরী করে কার্যত ২০ ডিসেম্বরের পর কিছুটা অবকাশ মেলে, এবং তার পর বছরের সমস্ত জমিয়ে থাকা ছুটি নিয়ে, শীতের আমেজে একটু ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করে থাকেন অনেকেই। কিন্তু এবার হয়তো সেই আশায় জল ঢেলে গেল। কারন বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হতে না হতেই ছুটি বাতিল করে আরও চার চারটি কাজ সম্পন্ন করতে হবে ৩১ শে ডিসেম্বরের আগেই।
শিক্ষকদের ছুটি বাতিলঃ
SAS পরীক্ষাঃ
কেন্দ্রীয় সরকারের NAS এর অনুকরনে রাজ্য সরকার SAS পরীক্ষার আয়োজন করেছে, যেটি আগামী ১২ই ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। বাছাইকৃত স্কুল এই পরীক্ষায় অংশগ্রহন করলেও অন্যান্য স্কুলের শিক্ষকদের এই পরীক্ষার হলের ডিউটি তে ব্যাস্ত থাকবেন। তারপর খাতা দেখা। ১২ তারিখ পরীক্ষা আছে বলে স্কুলে ওই দিনের বার্ষিক পরীক্ষা ও পিছিয়ে দিতে হবে। ওই পরীক্ষার জন্য পড়ুয়াদের প্রস্তুত করার জন্য আলাদা ক্লাস নিতে হবে। সুতরাং ডিসেম্বরে শিক্ষকদের কার্যত ছুটি বতিল।
মেধা অন্বেষণ পরীক্ষাঃ
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিভাগের পড়ুয়াদের মেধা অন্বেশণ পরীক্ষা নেওয়ার অর্ডার দিয়েছে একাধিক জেলায়। নির্দিষ্ট কিছু স্কুলে ওই পরীক্ষা হবে। এই পরীক্ষা নেওয়া হবে সার্কেল লেভেলে। ১৮ ডিসেম্বর থেকে ২২ ই ডিসেম্বরের মধ্যে ১০০ মার্কের পরীক্ষা নিতে হবে। (ছুটি বাতিল)
সার্কেল লেভেল স্পোর্টসঃ
অতিমারীর কারনে ২ বছর স্পোর্টস বন্ধ থাকলেও এবছর সারা রাজ্য জুড়ে সার্কেল লেভেল থেকে রাজ্য পর্যায়ের স্পোর্টস হবে। তার আগে পড়ুয়াদের বাছাই করে তাদের প্রাক্টিস করাতে হবে। পড়ুয়াদের সঠিক উচ্চতা অনুযায়ী বাছাই করে তাদের সার্কেলে পাঠাতে হবে। ঐদিন সার্কেল ভিত্তিক খেলাধুলা হবে।
সবুজ সাথীঃ
আগামী ৩ মাসের মধ্যে রাজ্যের সমস্ত স্কুলের নবম শ্রেণীর পড়ুয়াদের সবুজ সাথী প্রকল্পের মাধ্যমে সাইকেল দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের মোট ১২ লক্ষ ২৭ হাজার পড়ুয়া এবার এই সাইকেল পাবে। এই নিয়ে আজ শিক্ষা দপ্তর সমস্ত স্কুলে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে। বাংলার শিক্ষা পোর্টালে নথিভুক্ত সমস্ত নবম শ্রেণীর পড়ুয়াদের আগামী সাত দিনের মধ্যে সাইকেল দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। যার জেরে এই প্রস্ক্রিয়ার প্রস্তুতি এবং প্রদানের জন্য শিক্ষকদের দ্বায়িত্ব বাড়ছে।
পর পর অর্ডারের জন্য শিক্ষকদের এই মাসে কার্যত অবকাশ বলে কিছুই থাকছে না। এই প্রসঙ্গে শিক্ষকদের একাংশের মত, টানা দুই বছর বন্ধ থাকায় এবার একের পর এক অর্ডার আসছে। এছাড়াও স্কুলে শিক্ষকেরা সময়মতো আসছেনা, এই অভিযোগে এবার উপস্থিতির প্রমান ও Attendance register এর ছবি তুলে পাঠাতে হচ্ছে। সব কিছু মিলিয়ে ছুটি বাতিল তথা শিক্ষকদের কার্যত চাপের উপর চাপ। (ছুটি বাতিল)
ডিএ নিয়ে সুপ্রিম নির্দেশ, পশ্চিমবঙ্গকে 14 তারিখ পর্যন্ত সময় দিলো সুপ্রীম কোর্ট।
অন্যদিকে DA নিয়ে চাপা অসন্তোষ দেখা দিয়েছে শিক্ষকদের। আবার DA মামলায় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি করা হয়নি বলে অভিযোগ। প্রশ্ন উঠছে তবে কি DA দিলে শিক্ষকেরা পাবেন না? যদিও শিক্ষকদের একাংশের দাবী, এতদিন সরকারী কর্মীদের যত ভাতা কিম্বা বেতনবৃদ্ধি হয়েছে, তার ইফেক্ট শিক্ষাদপ্তর ও শিক্ষকদের জন্য লাঘু করেছে, সুতরাং এই ধরনের বিতর্ক সৃষ্টি করে একপ্রকার বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকারী কর্মীরা DA পেলে শিক্ষকেরাও পাবেন।
এই ব্যাপারে আপনার কি মত, নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। অন্যদিকে আগামী ১৪ই ডিসেম্বর সুপ্রীম কোর্টে DA মামলার শুনানি। ঐদিন সমস্ত পার্টিকে নিজেদের পক্ষে হলফনামা জমা দিতে হবে। তারপর আসল শুনানি শুরু হবে। যদিও সরকারী কর্মীরা আশা করছেন, হাইকোর্টের মতো সুপ্রীম কোর্ট ও কর্মীদের পক্ষেই রায় দেবে।