তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর পুলিশ প্রশাসনকে সহযোগিতা করার জন্য এক নতুন পদের সূচনা করা হয়, নাম সিভিক ভলেন্টিয়ার (Civic Volunteer). রাজ্যজুড়ে পুলিশ প্রশাসনকে বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করে থাকেন এই সিভিক ভললেন্টিয়াররা। রাস্তায় ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে মেলা, খেলা, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান, মিটিং, মিছিল, সমাবেশ সহ বহু জায়গায় এই সিভিক ভলান্টিয়াররা পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করেন।
Civic Volunteer দের ডিউটিতে বদল, নয়া নির্দেশ লালবাজারের।
শুধু তাই নয়, যেহেতু সিভিক ভলান্টিয়াররা বেশিরভাগ এলাকায় স্থানীয় থানায় কাজ করেন সেই সুবাদে এলাকায় কোনো অপরাধমূলক কাজকর্মের ছোটখাটো ইনপুট পুলিশ বিভাগকে দেওয়ার জন্যও তাদেরকে মাঝেমধ্যেই কাজ করতে দেখা যায়। আবার এই Civic Volunteer দের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে একাধিক দৌরাত্ম্যের অভিযোগ রয়েছে।
যার ফলে কিছু কিছু সময় পুলিশ প্রশাসনের ভাবমূর্তির উপরেও এর প্রভাব পড়েছে। তবে মূলত ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজেই ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় তাদের। তার কারণ, বহু জায়গাতেই ট্র্যাফিক গার্ডে পর্যাপ্ত পরিমাণে কনস্টেবল এর অভাব রয়েছে। তাই সেই সমস্ত জায়গায় ট্র্যাফিক ব্যবস্থাকে পরিচালনা করার জন্য সিভিক ভলেন্টিয়ারদের দিয়ে কাজ করানো হয়।
কিন্তু তাদের একাংশ ক্ষমতার অপব্যবহার করে জনগন কে হয়রানি করেন, এই অভিযোগ বার বার সামনে এসেছে। কয়েকদিন আগে এক প্রশাসনিক সভায় ও জানিয়েছেন, সবাই খারাপ হয়না, কয়েকজনের জন্য বদনাম হচ্ছে। রাস্তায় যেহেতু ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকেন সেহেতু Civic Volunteer দের হাতে ডিউটির সময় ওয়াকিটকি দেওয়া হয়ে থাকে। আর তাদের হাতে ওয়াকিটকি থাকার কারণে বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলেই প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে।
কোনো পুলিশ অফিসারের তরফে যখন ট্র্যাফিক গার্ডের Civic Volunteer এর হাতে থাকা ওয়াকিটকিতে রাস্তার মাঝে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পাঠানো হচ্ছে তখন দেখা যাচ্ছে আচমকা অন্য কোনো বার্তা সেখানে ঢুকে পড়ছে। ফলে সম্পূর্ণ ব্যবস্থা পরিচালনা করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সমস্যা তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে যখন রাস্তায় ভিআইপিদের যাতায়াতের সময় তখনই এই অসুবিধা বেশি হচ্ছে। তাই এবার থেকে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের হাতে আর ওয়াকিটকি দেওয়া হবে না বলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বর্তমান সময়ে কলকাতা পুলিশে সার্জেন্ট, ট্রাফিক অফিসার, কনস্টেবল, হোমগার্ড এবং তার সঙ্গে সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাছে ওয়াকিটকি থাকে। যাতে তারা রাস্তায় এক বিট থেকে অন্য বিটের সংযোগ রক্ষা করতে পারেন। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই Civic Volunteer দের ছোট রাস্তায় এই ওয়াকিটকি দেওয়া হতো। কোনো গুরুত্বপূর্ণ শহরের বড় রাস্তার উপরে তাদের হাতে ওয়াকিটকি ছিল না।
সিভিক ভলান্টিয়ারদের ওয়াকিটকি দেওয়ার কারণ যাতে যান চলাচলের খবর ঠিকভাবে প্রয়োজন হলে ট্রাফিক কন্ট্রোলে জানাতে পারেন। তবে বর্তমানে লালবাজারের নিয়মে সারা শহরেই অটোমেটিক ট্রাফিক সিগন্যাল সিস্টেম চালু হয়ে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে ট্র্যাফিক ব্যবস্থা সঠিকভাবে চালু রাখার জন্য ওয়াকিটকি সকলের হাতে আর প্রয়োজন নেই বলেই জানাচ্ছেন ট্রাফিক অফিসারদের একাংশ।
যদি Civic Volunteer দের হাত থেকে ওয়াকিটকি নিয়ে নেওয়া হয় তাহলে অপ্রয়োজনীয় নির্দেশ না মানার অভিযোগ কমবে বলেই মনে করছেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। তাই লালবাজারের ট্র্যাফিক অফিসারদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এবার থেকে সিভিক ভলান্টিয়ারদের হাতে আর ডিউটিতে ওয়াকিটকি দেওয়া যাবে না।
PNB গ্রাহকেরা আর টাকা তুলতে পারবেন না, একাউন্ট বাঁচাতে কি করবেন দেখুন।
যে সমস্ত ওয়াকিটকি এখনো পর্যন্ত অতিরিক্ত হিসেবে রয়ে গিয়েছে, সেগুলি সব লালবাজারে ট্র্যাফিক কন্ট্রোলরুমে ফেরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে অনেক ক্ষেত্রে ট্রাফিক আইন সংক্রান্ত ফাইন নিয়ে অহেতুক হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। সেগুলোর থেকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
Written by Rajib Ghosh.