হঠাৎই রেশন কার্ড বাতিল হওয়ায় রেশন পাচ্ছেন না অনেকেই।
রেশন কার্ড শুধুমাত্র একটি ডকুমেন্টসই নয়, অনেক পরিবারের খাদ্য সংগ্রহের অবলম্বনও। বর্তমানে অনেকেই শুধুমাত্র সরকারি রেশনের উপর ভরসা করেই বেঁচে থাকে। আর হটাৎ করে সেই রেশন কার্ডই যদি বাতিল হয়ে যায়, তবে বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতই বিপদ নেমে আসে গ্রাহকদের সংসারে। আর পশ্চিমবঙ্গে বাতিল হলো ৬৭ লাখ রেশন কার্ড, এবং সংবাদ সুত্রে জানা গেছে, সংখ্যাটা দেড় কোটি ছাড়াবে। কি কারনে কার্ড বাতিল হলো, এই মুহুর্তে কি করা উচিত, জেনে নিন।
বিধানসভায় খোদ খাদ্যমন্ত্রী নিজের বিবৃতিতে 62 লক্ষ Ration Card বাতিলের লিস্টের কথা বলেন। কিন্তু কেন হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত? বাতিল রেশন কার্ডের লিস্টে আপনার নাম নেই তো? আজ এমনই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। আসুন জেনে নি বিস্তারিত।
বহু মানুষেরই রোজকার জীবন খাদ্য দপ্তরের রেশনের ওপরে নির্ভরশীল। খাদ্যের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সরকার এর পক্ষ থেকে সাধারণ জনগণকে AAY, PHH, SPHH, RKSY-1, RKSY-2 কার্ডের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বা স্বল্পমুল্যে প্রতি মাসে নিয়ম করে খাদ্য সরোবরাহ করা হয়ে থাকে।
তবে বহু দিন থেকেই এই রেশন কার্ড বাতিল নিয়ে শোনা যাচ্ছিলো অনেক কথা। অবশেষে খোদ খাদ্যমন্ত্রী প্রশ্ন উত্তর পর্বে বিষয়টি পরিষ্কার করে জানান বিধানসভায়। রাজ্যের জনগণের লক্ষ লক্ষ কার্ড বাতিল করা হয়েছে। রেশন কার্ড সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে বিধানসভায় খাদ্যমন্ত্রী জানান যে, রাজ্যে 62 লক্ষ 24 হাজার ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিল করা হয়েছে। এরপরে আরো বাতিল হবে।
কিন্তু হঠাৎ পুজোর আগে রাজ্যের এমন সিদ্ধান্ত কেন? খাদ্য মন্ত্রী রথীন ঘোষ বিধান সভার প্রশ্ন উত্তর পর্বে জানান, রাজ্যে রয়েছে প্রচুর অবৈধ রেশন কার্ড। প্রধানত তিনটি বিষয়ের ওপরে ভিত্তি করেই বাতিল করা হয়েছে এই বিপুল সংখ্যক রেশন কার্ড। যেগুলি হল- অস্তিত্বহীন রেশন কার্ড, মৃত ব্যক্তির কার্ড এবং নকল Ration Card.
এছাড়াও খাদ্য দপ্তরের কাছে তথ্য আছে যে প্রায় 1.5 কোটি ভুয়ো কার্ড ছড়িয়ে আবহে গোটা রাজ্য জুড়ে। ফলে রাজ্যের বিপুল পরিমান অর্থ নষ্ট হচ্ছে প্রতি মাসে। ভুয়ো রেশন কার্ডের হাত ধরে পাচার হয়ে যাচ্ছে রেশন। এভাবে কার্ড বাতিলের মাধ্যমে রাজ্যের কোটি কোটি টাকা সাশ্রয় হবে এবার থেকে।
হিসেবে সেই বিপুল অর্থের পরিমান প্রায় 800 কোটি টাকা। এই বিপুল অর্থ সাশ্রয় করতেই নড়েচড়ে বসেছে রেশন দপ্তর। প্রত্যেক Ration Card ধরে ধরে করা হচ্ছে স্ক্যানিং। অসংগতি ধরা পড়লেই তা ব্লক করে দেওয়া হচ্ছে সিস্টেম থেকে স্বয়ংক্রিয় ভাবে। পোর্টালে লাল রঙের সংকেত দিয়ে চিহ্নিত করা হচ্ছে ভুয়ো কার্ডগুলিকে।
বদলে গেল ব্যাংকের সুদের হার, কোন কোন ব্যাংক বেশি সুদ দিচ্ছে, নতুন লিস্ট দেখুন।
এই লাল চিহ্নিত কার্ড দিয়ে আর রেশন তোলা যাবে না এই মাস থেকে। মেশিনে ফিঙ্গার প্রিন্ট দিলেই মেশিন সনাক্ত করে দেবে ভুয়ো Ration Card. ফলে সেই কার্ডে আর রেশন সরবরাহ করা হবে না। এই ভুয়ো Ration Card বাতিলের প্রক্রিয়া সারা বছর ধরেই চলবে ধারাবাহিক ভাবে। আধার বা মোবাইল নম্বর লিঙ্ক করার মধ্য দিয়েই বেরিয়ে আসছে এই সকল ভুয়ো রেশন কার্ডের খবর।
রেশন দপ্তরের কর্মীরা এই বিষয়ে উঠে পড়ে লেগেছে। নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন অন্যান্য অফিস গুলির সাথে। কিছু কিছু এলাকায় বিশেষ করে কোলকাতা, রাজ্যের সীমান্তবর্তী কিছু জেলা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদীয়া, মুর্শিদাবাদ ছাড়াও আরো জেলা থেকে বাতিল প্রচুর কার্ড। সূত্র মারফত খবর পাওয়া গেছে যে, মাত্র কয়েক মাসেই প্রায় 40 লক্ষ নতুন রেশন কার্ড তৈরী হয়েছে এই সকল জেলায়।
রেশন কার্ড চালু থাকলেই, এবার বিনামূল্যে চিকিৎসা, নতুন সরকারি প্রকল্প চালু।
বহু দিন তাদের কার্ডের সাথে আধার কার্ড এবং মোবাইল নম্বর লিঙ্ক করার কথা বলে আসছে খাদ্য দপ্তর। অনেকেই এই কাজ সেরে ফেলেছেন। কিন্তু প্রচুর এমন লোক আছেন যারা ভাবছেন, আজ নয় কাল করবো। তারা লিস্ট চেক করলে বুঝে যাবেন যে Ration Card বাতিল হলে কি রকম সমস্যা দেখা দেবে।
অবশেষে ইলেকট্রিক বিল কমে গেল, মাত্র ৩ টাকা প্রতি ইউনিট, পুজোর আগে বিরাট সুখবর।
এখনই নিকটস্থ অফিস, কমন সার্ভিস সেন্টারে গিয়ে এই লিংকের কাজ সেরে ফেলুন। কারণ যদি এখনো এই কাজ ফেলে রাখেন, তাহলে ভবিষ্যতে বেশ সমস্যায় পড়তে হবে আপনাকে। আরো অন্যান্য বিষয়ে খোঁজ রাখতে নজর রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে। ধন্যবাদ জানিয়ে প্রতিবেদন শেষ করছি। Written by Mukta Barai.