বাজারে প্রচুর চাহিদা, মাত্র 2 হাজার টাকা দিয়ে শুরু করুন এই ব্যবসা পরিকল্পনা, মাসিক আয় 30 হাজার, লসের চান্স নেই।

ব্যবসা পরিকল্পনা যারা করছেন তাদের জন্য দুর্দান্ত আইডিয়া।

চাকরির চিন্তা বাদ দিয়ে, ঘরে বসে না থেকে ব্যবসা পরিকল্পনা করে, সময় থাকতে অন্তত আয়ের রাস্তা তইরি করাই বুদ্ধিমানের কাজ। কারন যেখানে সরকারই মুড়ি বিক্রি, চপ বিক্রি করার পরামর্শ দিচ্ছে, সেখানে কত সহজে সরকারি চাকরী হবে, কিম্বা আদৌ হবে কিনা সেই বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। তাই ছট হোক বা বড়, কোনও কাজই অসম্মানের নয়। তাই বসে না থেকে কিছু একটা শুরু করাই শ্রেয়। এরপর সময়ই আপনার রাস্তা তৈরী করে দেবে।

ব্যাবসা অনেক প্রকার রয়েছে। তবে সবচেয়ে মূল বাঁধা হলো পুজি বা মূলধন। আর এই ব্যবসায়ে মূলধন একদম নেই বললেই চলে। তাছাড়া সমাজের সব সময়ে সরকারি বা বেসরকারি চাকরির যেমন কদর রয়েছে তেমনি কদর রয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যের। ব্যবসা-বাণিজ্যের কথা মনে এলে প্রথমেই আসে যে বিষয়টি তাহলো পুঁজি। আজ আমরা স্বল্প পুঁজিতে কিভাবে মাশরুমের চাষ করা যায় এবং তার উল্লেখযোগ্য দিক গুলি সম্পর্কে আলোচনা করব।

ব্যবসা পরিকল্পনা
মাশরুম খাদ্যটি অত্যন্ত পুষ্টিকর ও সুস্বাদু এবং এর মধ্যে রয়েছে অনেক ঔষধি গুণ। বাইরের পাশ্চাত্য দেশগুলিতে এই খাবারটি বেশ জনপ্রিয় হলেও ধীরে ধীরে ভারতে এটির জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ফলে বাজারে নতুন করে তৈরি হচ্ছে চাহিদা। আর এই চাহিদার ফলেই এই ব্যবসার একটা সুবর্ণ সুযোগ সামনে এসেছে। আর মনে রাখবেন, এই ব্যবসায় লসের কোনও সম্ভাবনা নেই।

মাশরুমের গুনাগুণ সম্পর্কে একটুখানি জেনে নিলে আপনিও বুঝতে পারবেন কেন এর এত কদর। মাশরুমে থাকে প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেলস, অ্যামাইনো এসিড, এন্টিবায়োটিক এবং প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। ফলে বাচ্চা থেকে বয়স্ক প্রত্যেকের শরীরের জন্য এই মাশরুম অত্যন্ত উপযোগী একটি খাবার।

চাষ কথাটি অবশ্যই ওতপ্রোতভাবে জড়িত চাষের জমি এর সাথে। কিন্তু আপনি হয়তো এটা জেনে অবাক হবেন যে এই মাশরুম চাষের জন্য আপনার লাগবে না কোন মাঠের বিশাল জমি। আপনি ঘরে বসেই এই মাশরুমের চাষ করতে পারবেন খুব অল্প জায়গার মধ্যে। ফলে এক্ষেত্রে আপনার ব্যবসা পরিকল্পনায় পুঁজি খুবই কম দরকার হবে। আর জমি না থাকলে বাড়ীর উঠনে কিম্বা ছাদেই এই ব্যাবসা করা সম্ভব।

এছাড়াও মাশরুম উৎপাদনের জন্য আপনার যেগুলি দরকার তার মধ্যে রয়েছে ধানের খড়, কাঠের গুঁড়ো, কাগজ, গমের ভুসি, প্লাস্টিকের প্যাকেট ইত্যাদি যা বাজারে খুব অল্প দামে পাওয়া যায়। এই মাশরুম চাষের জন্য আপনাকে আলাদা করে সময় ব্যয় না করলেও চলবে। ঘরের মহিলারা তাদের অবসর সময়ে এই মাশরুম চাষের পেছনে সময় দিলেই চলবে

রেলের জায়গায় দোকান খুলে নিজেকে স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত করুন, দারুন সুযোগ

মাশরুম চাষের জন্য আপনাকে প্রথমেই ব্যবসা পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণ নিতে হবে কারণ ব্যবসা পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণ ছাড়া কোন কাজে সফল হওয়া খুবই অসুবিধাজনক। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন কৃষি দপ্তর, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন এনজিও থেকে মাঝে মাঝে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়ে থাকে। সেখানে অংশগ্রহণ করে আপনি মাশরুম করে, উৎপাদন, মাশরুমের বিপণন এবং প্রক্রিয়াজাতকরণ সম্পর্কে বিশদে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন।

এই চাষ করার জন্য আপনাকে প্রাথমিকভাবে মাত্র 2 থেকে 5 হাজার টাকা নিয়ে ব্যবসা পরিকল্পনা শুরু করতে পারেন ছোট আকারে।পরবর্তীকালে লাভ বুঝতে পারলে বৃহৎ আকারে এটি চালু করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে 30 থেকে 40 হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করে আপনি একটি মাশরুমের ফার্ম তৈরি করতে পারবেন।

ব্যবসা করতে গেলে ঝুঁকির বিষয়টি আগে মাথায় রাখা খুবই দরকার। এই মাশরুম চাষে তেমন কোন ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ হয় না, যদি সঠিকভাবে পাস্তুরাইজেশন প্রক্রিয়া ব্যবহারের মাধ্যমে এই চাষ করা হয়। এছাড়াও এক্ষেত্রে আপনার বাইরে থেকে কোন সার প্রয়োগ করতে হয় না। মাশরুমের মূল খাবার হচ্ছে জল।সারাদিনে সময় এর উপর নির্ভর করে প্রায় ছয় থেকে আটবার জল দিতে হয় এই মাশরুম চাষে সেই কারণে এটি থাকে সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ এবং পুষ্টিকর।

সফল ব্যবসা পরিকল্পনা
আসুন জেনে বলে, কি কি ধরনের মাশরুমের কদর বাজারে রয়েছে এবং তার দাম কেমন। পৃথিবীতে প্রায় হাজারো রকমের মাশরুমের প্রজাতি রয়েছে। সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য এবং নিরাপদ খাবার উপযোগী মাশরুমের সংখ্যা অল্প কিছু। সেই মাশরুম গুলোর মধ্যে রয়েছে বাটন মাশরুম, স্ট্র মাশরুম, ওয়েস্টার মাশরুম, মিল্কি মাশরুম, ক্রেমিনি মাশরুম, সীটাকি মাশরুম, পর্তবেলো মাশরুম ইত্যাদি। তাই জেনে বুঝে মাশরুম ব্যবসা পরিকল্পনা শুরু করলে লাভের পরিমান বাড়বে।

এই সকল মাশরুম গুলির তাদের গুণাগুণের উপর এবং উৎপাদনের পরিমাণ এর ওপর ভিত্তি করে দাম নির্ধারিত হয়ে থাকে বাজারে। আমাদের ভারতীয় বাজারে ওয়েস্টার মাশরুম, বাটন মাশরুম এগুলো বেশ জনপ্রিয়। কারণ আমাদের এই জলবায়ুতে এই দু’ধরনের মাশরুমে বেশি পরিমাণে চাষ করা হয়ে থাকে।

মাশরুমের বীজ উৎপাদন করা খুবই সহজ। আপনি অল্প দামের মধ্যে একটি ইনোকুলেশন চেম্বার এবং স্টেরিলাইজেশন মেশিন কিনে নিলে নিজের ঘরে বসেই স্পন প্যাকেট তৈরি করতে পারবেন। পরবর্তীকালে চাষের জন্য আপনি নিজেই বীজ ব্যবহার করতে পারবেন এবং বাইরে এই স্পন বিক্রি করলে লাভবান হবেন।

কম সময়ে দ্রুত ফলন পেতে গেলে এই মাশরুমের চাষ অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটি করে। এক্ষেত্রে সঠিক পদ্ধতি মেনে পাস্তুরাইজেশন পদ্ধতিতে স্পন প্যাকেট উৎপাদন করলে মাইসেলিয়াম দ্বারা পরিপূর্ণ হতে মাত্র 10 থেকে 15 দিন সময় লাগে। এরপর বিভিন্ন জাতির উপর নির্ভর করে প্যাকেট তৈরি করার 7 থেকে 15 দিনের মধ্যেই ফলন পাওয়া সম্ভব এবং তা বাজারজাত করে ভালো আয় করা সম্ভব।

বাজারে প্রচুর চাহিদা, বাড়িতে বসেই শুরু করুন এই ব্যবসা, দাড়িয়ে গেলে অল্প দিনেই মালামাল।

বর্তমানে অনলাইনে ড্রাই মাশরুম বিক্রি করা হয়ে থাকে। মাশরুম তৈরি করে তা রোদে শুকিয়ে ড্রাই করে অনলাইনের মাধ্যমেও বিক্রি করা সম্ভব। এছাড়া এই মাশরুম লোকাল মার্কেটে, বিভিন্ন ফাস্টফুডের দোকানে বিক্রি করা যেতে পারে। এখন বাড়ির লোকেরাও এই মাশরুম বাজার থেকে কিনে এনে খায়। সুতরাং লোকাল মার্কেটে এর কদর রয়েছে।

এই রকমের আরো নতুন নতুন ব্যবসার আইডিয়া বা ব্যবসা পরিকল্পনা নিয়ে আসার জন্য আমরা সর্বদা নিয়োজিত। অল্প পুঁজির ব্যবসায় সফলতা পাওয়া সহজ। এক্ষেত্রে ঝুঁকিও খুব কম থাকে। তাই, ভালো করে প্রশিক্ষণ নিয়ে শুরু করুন ব্যবসা। একবার এই ব্যবসা দাঁড়িয়ে গেলে, চাকরি লাগবে না। প্রতিবেদনটি ভালো লাগলে অবশ্যই জানাবেন। ধন্যবাদ।
Written by Mukta Barai.

শেয়ার করুন: Sharing is Caring!

Leave a Comment