২০১৪ সালে প্রকাশিত হয় প্রাথমিক টেট বিজ্ঞপ্তি (West Bengal Primary Teacher Recruitment Primary TET 2014)। ২০১৫ সালে পরীক্ষা, ২০১৬ এর শেষের দিকে ইন্টারভিউ এবং ২০১৭ এর ফেব্রুয়ারী ও মার্চ মাসে ৪২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ হয়। নিয়োগের আগে থেকেই একাধিক মামলায় জর্জরিত টেট ২০১৪। এবার আরও বড় আশঙ্কার মেঘ জমতে শুরু করলো।
সংবাদ সুত্রে জানা যাচ্ছে, স্বদেশ দাশ নামের এক প্রাথমিক শিক্ষক টেট পাশ না করার অভিযোগে বহিষ্কৃত হন। উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ বা DPSC এর চেয়ারম্যান। তিন বছর চাকরীর পর বহিষ্কার হওয়ায় মামলা গড়ায় হাইকোর্টে। বিচারপতি অভিজিত গাঙ্গুলীর বেঞ্চে মামলার শুনানী চলাকালীন মামলাকারী প্রাথমিক শিক্ষক স্বদেশ দাশের আইনজীবী আদালতে এরকম আরও ১২ জনের তালিকা দিয়ে বসে। অভিযোগ তারাও নাকি টেট পাশ না করেই চাকরী পেয়েছেন। আর তারপরই আরও অভিযোগ করেন যে আরও এরকম অসংখ্য প্রার্থী নাকি আছেন, যারা টেট (Primary TET 2014) পাশ না করেই চাকরী পেয়েছেন। নড়েচড়ে বসে আদালত।
মামলার গতিপ্রকৃতি দেখেই বিচারপতি অভিজিত গাঙ্গুলী মামলাটিকে জনস্বার্থ মামলার রূপ দেন। এবং সেই নতুন মামলার ডিভিশন বেঞ্চ ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে গত ৯ সেপ্টেম্বর নির্দেশ দেয় ২০১৭ সালে নিযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষক এবং ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীদের সম্পূর্ণ মেধাতালিকা আলাদা করে জমা দিতে। এবং দুটো তালিকাকে যাচাই কড়া হবে। আদালত সম্প্রতি আরও জানায়, পর্ষদ ( WBBPE) যদি তালিকা না ও দেয়, আদালতই জোগাড় কোর্টে পারবে।
এদিন সেই তালিকা জমা করলো প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (WBBPE)। এই তালিকায় রয়েছে কোন কোন প্রার্থী টেট ( TET 2014) পাশ করেছে। এবং তাদের প্রাপ্তনম্বর ও ওয়েটেজ। আরেকটি তালিকায় আছে ২০১৭ সালে নিযুক্ত হওয়া ৪২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের তালিকা। এবার দুটো লিস্ট ট্যালি করা হবে। যার জেরে কার্যত ২০১৭ সালে নিযুক্ত হওয়া ৪২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের ভবিষ্যৎ এখন হাইকোর্টের কাছেই।
এ প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক সংগঠনের এক কর্তা বলেন, টেট ( TET 2014) কেলেঙ্কারী সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি। লাখ লাখ বেকার যুবক কে নিয়ে খেলা চলছে। রাতারাতি SMS, Email করে চাকরি ধরিয়ে দিচ্ছে। সাদা খাতা জমা দিয়ে পাশ করছে। এটা আমার কথা নয়, পুরনো খবরের কাগজ খুলুন সব পেয়ে যাবেন। কোনও মেরিট লিস্ট নেই। তবে যারা সত্যিকারের পড়াশোনা করে চাকরি পেয়েছে তাদের ভয় নেই।