আরজি কর (RG Kar Case) ঘটনার মাঝেই রাজ্যের মহিলাদের জন্য বড় খবর। বর্তমানে রাজ্যের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রকল্প হল লক্ষীর ভান্ডার (Lakshmir Bhandar Scheme) যার মাধ্যমে মহিলারা প্রতি মাসে ১০০০ এবং ১২০০ টাকা করে ভাতা পাচ্ছেন। তবে এবার অনেক মহিলা কেই সেই প্রকল্পের তালিকা থেকে বাদ দিতে চলেছে সরকার। শুধু তাই নয় এতদিন পর্যন্ত যত টাকা তারা পেয়েছেন সেইসব ফেরত দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে। কি করবেন এবার রাজ্যের গরীব দুঃখী মা বোনেরা? সরকারের এই সিদ্ধান্তের পেছনেই বা কি কারণ?
অনিচ্ছুকেরা লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা ফেরত দিক, কুনাল ঘোষ
রাজ্যের আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নারী নিরাপত্তার অভাব নিয়ে সরব হয়ে উঠেছে জনমত। আরজি করের ঘটনা সামনে আসার পর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন ক্লাব ও সংগঠন সরকারের নারীকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করেছে। অভিযোগ উঠেছে যে, আরজি করের ঘটনায় সরকারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং সুবিচার নিশ্চিত করার অক্ষমতা প্রকাশ পেয়েছে। নির্যাতিতার মা সম্প্রতি বলেছেন, “যাঁরা কন্যাশ্রী বা লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের সুবিধা নেন, তাঁরা তা নেওয়ার আগে তাঁদের ঘরের লক্ষ্মী সুরক্ষিত কি না, এক বার ভাববেন।”
অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন এবং দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ধর্ষণের মতো অপরাধ দমনের জন্য কঠোর আইন আনতে চিঠি লিখেছেন। কিন্তু রাজ্যের মানুষ এই ঘটনার জন্য বারবার তৃণমূল সরকারকেই দায়ী করছেন। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েও। বিরোধীরা সরকারের প্রকল্পের তীব্র সমালোচনা করতে শুরু করেছে।
এই প্রেক্ষাপটে গতকাল তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। তাঁর দাবি, লক্ষ্মীর ভান্ডার এবং অন্যান্য সরকারি প্রকল্পে যারা থাকতে চান না, তাঁদের জন্য ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা উচিত। কুণালের এই মন্তব্য রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে চলমান বিরোধের মধ্যেই এসেছে।
সমাজমাধ্যমে পোস্ট করা একটি বার্তায় তিনি বলেন, “যাঁরা লক্ষ্মীর ভান্ডার এবং রাজ্য সরকারের অন্যান্য প্রকল্পে থাকতে চান না, তাঁদের জন্য ফেরত দেওয়ার একটি ফর্ম দিক রাজ্য সরকার। দুয়ারে সরকার শিবিরে ফেরত কাউন্টার থাকুক।”
এছাড়া, কুণাল ঘোষ রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজের মহিলা চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছেন। তাঁর মতে, এই ঘটনায় সরকারের ভূমিকা সন্দেহজনক এবং এটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কুণাল ঘোষ আরও জানান, “আমরাও আরজি করে দোষী বা দোষীদের ফাঁসি চাই। কুরাজনীতি নয়।” তিনি সমাজমাধ্যমে বিরোধীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “ফেসবুকে বিকৃত বিপ্লবী না সেজে ফেরত ফর্ম ফিল-আপ করুন।”
বিজেপি তৃণমূলের অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছে এবং রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, “তৃণমূলের রাজনীতি মানুষকে পণ্য বানানোর রাজনীতি। মহিলাদের ভোট আর আবেগ কিনতেই এই প্রকল্প সরকার চালু করেছিল।” তবে, অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মনে করছেন, তৃণমূল সরকারের এই অবস্থান রাজনৈতিক প্রতিশোধের ইঙ্গিত দেয়।
Written by Nabadip Saha.