বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি অস্থিরতার এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে। এরই মধ্যে Demonitisation এর সিদ্ধান্ত, বাংলাদেশের জাতির জনক শেখ মুজিবের ছবি উঠে যাচ্ছে সমস্ত নোট (Bangladeshi Taka) থেকে। যার জেরে হুড়মুড়িয়ে পড়ছে টাকার দাম। আর সেই আঁচ ছটিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ ও ভারতের একাংশে।
Demonitisation of Bangladeshi Currency
পদ্মাপার থেকে শুরু করে রাজধানী ঢাকা, কোথাও শান্তির নিশানা দেখা যাচ্ছে না। সেনাবাহিনীর অধীনে থাকা সত্ত্বেও, দেশের ভেতরে এক বিরাট নৈরাজ্য বিরাজ করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে গভর্নর এবং ডেপুটি গভর্নরদের পদত্যাগের দাবিতে কর্মীদের বিক্ষোভ এখন এক নতুন মাত্রা ধারণ করেছে। গভর্নরের পদত্যাগের পর পরিস্থিতি আরও চরম আকার ধারণ করেছে।
এই অস্থিরতার প্রভাব বাংলাদেশি টাকার (Bangladeshi Taka) ওপরেও পড়েছে। নোট বাতিল বা Demonitisation করে মুজিব রহমান ও শেখ হাসিনার ছবি টাকা থেকে তুলে দেওয়ায় চড়চড়িয়ে বিনিময় মূল্য কমছে বাংলাদেশি টাকার। ভারতীয় মুদ্রার সঙ্গে বাংলাদেশি টাকার বিনিময় হার এখন ১ রুপি = ১.৫০ টাকা। এর মানে হল, ভারতের ১০০ রুপি বদলে বাংলাদেশি ১৫০ টাকা পাওয়া যাচ্ছে। আগের তুলনায় ভারতীয় টাকার দর কমে যাওয়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অস্থিরতারই প্রমাণ।
পেট্রাপোল সীমান্তে আগে বাংলাদেশি ১০০ টাকার বিনিময়ে ভারতীয় ৭১ টাকা পাওয়া যেত, কিন্তু এখন তা কমে ৬১ টাকায় দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ, প্রতি ১০০ বাংলাদেশি টাকায় ভারতীয় রুপির দর ১০ টাকা কমেছে। এই বিনিময় হার পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য বিপুল সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এই অবস্থায় বাংলাদেশিদের ভারতীয় মুদ্রার সঙ্গে লেনদেন করতে আরও বেশি অর্থ খরচ করতে হচ্ছে।
অস্তিরতার কারণে ঢাকার অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এবং অর্থনীতি দুটোই গভীর সঙ্কটে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের উত্তেজনা আছড়ে পড়েছে। হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীরা মনে করছেন, দেশের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারে নতুন নেতৃত্বের প্রয়োজন। তারা মনে করছেন, নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হলে দেশ কিছুটা শান্তি ফিরে পাবে। কিন্তু, প্রশ্ন উঠেছে যে, ইউনুস কি সত্যিই দেশের শান্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবেন?
আরও পড়ুন, লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা বাড়ছে। পশ্চিমবঙ্গের মহিলারা এবার থেকে কত টাকা করে পাবেন?
এই অবস্থায়, বাংলাদেশি রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং তার ছেলে তারিক রহমানও দেশে ফিরছেন। এদিকে জামাতের কেন্দ্রীয় অফিসের তালা ১৩ বছর পর খুলে দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে দেশের রাজনৈতিক এবং সামাজিক অস্থিরতা আরও জোরালো হয়ে উঠেছে।
ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে সীমান্তের মিশ্রণও উদ্বেগজনক। বাংলাদেশের অস্থিরতার প্রভাব ভারতে প্রবাহিত হতে পারে, যা দুই দেশের সম্পর্কের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে। বিশেষ করে সীমান্তের ওপারে, অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অস্থিরতা নিয়ে ভারতীয় সরকারকেও সতর্ক থাকতে হবে।
সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার এক মারাত্মক চিত্র তুলে ধরে, যা শুধু দেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতি নয়, আন্তর্জাতিক মঞ্চেও একটি বড় সংকট তৈরি করেছে।
Written by Nabadip Saha.