ফ্রি রেশন ব্যবস্থায় (Free rationing system) সরকারের নতুন উদ্যোগ। রেশন ব্যাবস্থাকে আরও উন্নত করতে স্বাধীনতা দিবসে Rice ATM তথা প্রযুক্তির সাহায্যে রেশন বন্টনের ঘোষণা হলো। যার জেরে প্রচুর রেশন গ্রাহক উপকৃত হতে চলেছেন।
Rice ATM Machine for Ration Distribution
দেশের রেশন ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যা দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত জনগণের জীবনকে সহজ করতে সহায়ক হবে। বর্তমানে আমাদের দেশের প্রায় ৮০ কোটি মানুষ প্রতি মাসে বিনামূল্যে গণবন্টন ব্যবস্থার মাধ্যমে চাল ও গম প্রাপ্তির সুবিধা পাচ্ছেন। তবে, রেশন প্রাপ্তির জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানো একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সেই সমস্যা সমাধানের জন্য এবার চালু হয়েছে নতুন একটি সিস্টেম—রাইস এটিএম (ATM)।
রেশন ব্যবস্থায় নতুন উদ্যোগ – রাইস এটিএম
বিষ্যতের আধুনিক রেশন ব্যবস্থার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হল রাইস ATM Machine. এই নতুন সিস্টেমটি চালু হওয়ার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জন্য রেশন প্রাপ্তির প্রক্রিয়া আরও সহজ ও সুবিধাজনক হবে। আগের দিনের লম্বা লাইন, ধৈর্যের পরীক্ষা এবং নানা জটিলতা এবার হয়তো অতীত হতে চলেছে। রেশন কার্ডের মাধ্যমে চাল গ্রহণের এই নতুন পদ্ধতি কেমন করে কাজ করবে, তার বিস্তারিত বিশ্লেষণ করা যাক।
রাইস এটিএম কিভাবে কাজ করবে?
রাইস ATM মেশিনটি একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি দ্বারা পরিচালিত হবে, যা ব্যাংকের এটিএম মেশিনের মতোই কাজ করবে। এই মেশিনে একটি টাচস্ক্রিন ব্যবস্থা থাকবে যেখানে গ্রাহকরা তাদের রেশনকার্ডের নম্বর ইনপুট করবেন। এরপর, বায়োমেট্রিক অথেনটিকেশন করতে হবে।
এর জন্য গ্রাহকদের আঙুলের ছাপ (ফিঙ্গারপ্রিন্ট) মেশিনে দিতে হবে যা নিশ্চিত করবে যে সেই ব্যক্তিই প্রকৃত গ্রাহক। বায়োমেট্রিক অথেনটিকেশন সফল হলে, মেশিন থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ চাল বের হয়ে আসবে।
গ্রাহকরা এই মেশিনের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ২৫ কেজি পর্যন্ত চাল গ্রহণ করতে পারবেন। এর ফলে একদিকে যেমন রেশন পাওয়ার প্রক্রিয়া দ্রুত ও সহজ হবে, তেমনি কৃত্রিম পদ্ধতি বা দুর্নীতির প্রবণতা কমে আসবে।
রাইস এটিএম কোথায় চালু হয়েছে?
এই অভিনব চালের এটিএম প্রথমে ওড়িশার ভুবনেশ্বরের মঞ্চেশ্বরে চালু করা হয়েছে। উদ্বোধন করেন ওডিশা সরকারের খাদ্য সরবরাহ এবং ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী ক্রুশনাচন্দ্র পাত্র। ওডিশা সরকার এই প্রকল্পের ঘোষণা করেছে। সরকারি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, খুব শিগগিরই গোটা রাজ্যে ৩০টি চালের এটিএম তথা Rice ATM Machine স্থাপন করা হবে। এছাড়া, কেন্দ্র সরকারের এক দেশ এক রেশন (One nation one ration) প্রকল্পের অধীন অন্যান্য রাজ্যেও এই ধরনের এটিএম স্থাপন করা হবে।
আরও পড়ুন, স্বাধীনতা দিবসে মোবাইল রিচার্জ ফ্রি। 3 মাস রিচার্জ লাগবে না।
রাইস এটিএম এর সুবিধা
চালের এটিএম মেশিন চালু হওয়ার ফলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা পাওয়া যাবে।
প্রথমত, লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে রেশন নেওয়ার সমস্যা দূর হবে। গ্রাহকরা যে কোন সময়ে এই এটিএম থেকে তাদের প্রাপ্য চাল গ্রহণ করতে পারবেন, যা তাঁদের জীবনকে আরও সহজ করবে।
আরও পড়ুন, Har Ghar Tiranga – স্বাধীনতা দিবসে দেশবাসীকে বিশেষ উপহার দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।
দ্বিতীয়ত, রেশন কার্ডের জালিয়াতির সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। চালের এটিএম সিস্টেমে বায়োমেট্রিক অথেনটিকেশন থাকার কারণে ভুয়ো গ্রাহকদের চিহ্নিত করা সহজ হবে এবং প্রকৃত গ্রাহকদের সঠিকভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। ফলে, রেশন বিতরণের সিস্টেম আরও সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ হবে।
শেষে, এই প্রযুক্তির সাহায্যে সরকারি কোষাগারের অর্থনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখা সহজ হবে। অবৈধ তদারকি ও জালিয়াতি কমানোর ফলে সরকারি খরচের অপচয় কমবে এবং দুঃস্থ জনগণের জন্য প্রাপ্য সুবিধা নিশ্চিত হবে।
Written by Nabadip Saha.