বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রয়াণে দুপুরে পূর্ণ দিবস ছুটি ঘোষণা! তরজা তুঙ্গে। আরও ৩টি ছুটির বিজ্ঞপ্তি

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর (Buddhadeb Bhattacharjee) মৃত্যুদিনের ছুটি ঘোষণা (Special Holiday) নিয়েও এবার শুরু হল রাজনৈতিক তরজা। প্রয়াত হয়েছেন প্রাক্তন বাম মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার প্রয়ানের দিন রাজ্যে পূর্ণদিবস ছুটি ঘোষণা করে তৃণমূল সরকার। কিন্তু সেই ছুটিকে ঘিরেই বিরোধীদল বিজেপির সঙ্গে শুরু হয় তুমুল দ্বন্দ্ব। জল এতদূর গড়ায় যে শেষ পর্যন্ত ব্যাপারটি পৌঁছায় হাইকোর্টের কাছে গিয়ে। এদিকে হাইকোর্টেও আইনজীবীদের মধ্যে এই নিয়ে শুরু হয় প্রতিযোগিতা। কার কতটা ক্ষমতা তা প্রমাণ করতে একদল চেষ্টা করে ছুটি ঘোষণা করতে, আর একদল ছুটি আটকাতে। শেষ পর্যন্ত কি হলো, পক্ষে রায় দিল কোর্ট, জেনে নেব।

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ছুটি ঘোষণা নিয়েও বিতর্ক ও রাজনীতি!

বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া এই দ্বন্দ্বের সূচনা ঘটে যখন বার অ্যাসোসিয়েশনের তৃণমূলপন্থী সদস্যরা ছুটি ঘোষণার পক্ষে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। এই বিজ্ঞপ্তির পরেই বিজেপি-সমর্থিত আইনজীবীরা পাল্টা বিজ্ঞপ্তি জারি করে, পুরনো বিজ্ঞপ্তির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এরফলে, ৩টি পৃথক পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে এক ধরণের উনিশ-বিশ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় এবং আইনজীবীদের মধ্যে বিভাজন প্রকট হয়ে ওঠে। পরে রাতের দিকে তৃণমূলপন্থী সভাপতি আবারো বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ছুটির পক্ষে সায় দেন, যা আগের বিজ্ঞপ্তির বাতিল করার সিদ্ধান্তে আসে।

এই উভয়পক্ষের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নাচঘর দেখে বাস্তবে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টে এক ধরনের অলিখিত ছুটির মেজাজ দেখা যায়। বিচারপতিরা এজলাসে উপস্থিত থাকলেও, তাদের কার্যক্রম ছিল অত্যন্ত সীমিত। কোট, গাউন রাখার এবং বসার বার রুমগুলি বন্ধ হয়ে গেলে আইনজীবীরা আদালত কক্ষে প্রবেশ করতে পারলেন না। ফলে, যারা মামলার শুনানির জন্য আদালতে এসেছিলেন, তাদের ফিরে যেতে হয়। আইনজীবীরা যে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হবেন, সেটা হয়তো কেউ কল্পনাও করেননি।

এই পরিস্থিতি শুধু আইনজীবীদের কাছে নয়, বিচার বিভাগের অফিসারদেরও বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অনেক বর্ষীয়ান আইনজীবী আদালতে উপস্থিত থাকলেও, এই অচলাবস্থার কারণে তাদের শুনানি আদৌ হতে পারল না। এই ঘটনার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, আইনজীবীদের সংগঠনের মধ্যে রাজনৈতিক বিভাজন শুধু সামগ্রিকভাবে বিচার ব্যবস্থার কার্যকারিতাকেই ব্যাহত করে না, বরং সাধারণ মানুষের বিচার প্রাপ্তি ব্যবস্থার উপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

আরও পড়ুন, পশ্চিমবঙ্গের কর্মীদের ৭০০০ টাকা বেতন বাড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী। কাদের কত টাকা বাড়ছে?

এমন পরিস্থিতি যে আইনজীবীদের উন্নয়ন এবং আদালতের কার্যক্রম একযোগে পরিচালনার ক্ষেত্রে গুরুতর চ্যালেঞ্জ হতে পারে, তাতে সন্দেহ নেই। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মৃত্যুতে ছুটি নিয়ে যে ধরনের বিভাজন এবং রাজনৈতিক চাপের খেলা খেলেছে, তা বিচার বিভাগের সামগ্রিক কার্যক্রমের প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আইনজীবী সংগঠনগুলোর এই ধরনের অচলাবস্থা ভবিষ্যতে আইনজীবীদের সমন্বয় এবং আদালতের দক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।
সংবাদসুত্রঃ বাংলা হিন্দুস্তান টাইমস
Written by Nabadip Saha.

শেয়ার করুন: Sharing is Caring!

Leave a Comment