শিক্ষক নিয়োগ মামলায়, ২৬ হাজারের সাথে, আরো প্রচুর শিক্ষকের নাম জড়ালো। আদালতের সিদ্ধান্ত জেনে নিন

তিনমাস আগেই কলকাতা হাইকোর্ট স্কুল সার্ভিস কমিশনের (School Service Commission) ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করেছিল। সেই নিয়ে এখনও উত্তাল রাজ্য। মামলা পড়ে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। গত ১৬ জুলাই এই নিয়ে চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছিল আদালত। কিন্তু শুনানি আরো তিন সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়ায় ফের ঝুলে রইল চাকরি হারাদের ভবিষ্যৎ।

তবে এরই মাঝে শিক্ষকদের নিয়ে নতুন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে রাজ্যে। এখন ২৬ হাজার নয়, আরো শিক্ষকের চাকরি যাবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাজ্যের হাইকোর্ট (Calcutta High Court). কি কারণ? কোন কোন শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এই নির্দেশ দিল আদালত? বিস্তারিত জানব।

পূর্ব মেদিনীপুর প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ (DPSC) একটি নির্দেশিকা জারি করেছে, যেখানে সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের টিউশন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ উঠছিল যে, সরকারি স্কুলের অনেক শিক্ষক নিয়মিত স্কুলের পর বাড়িতে বসে ছাত্রদের টিউশন করিয়ে বাড়তি আয় করছেন। এই ধরনের কার্যকলাপ শিক্ষার মান এবং সমতা বজায় রাখতে বাধা সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এরই প্রেক্ষিতে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ (West Bengal Board of Primary Education) এই নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, কোনও শিক্ষক যদি সরকারি নির্দেশ অমান্য করে টিউশন করান, তাহলে তার চাকরি বাতিল করা হবে। এই নির্দেশিকা জারির ১৫ দিনের মধ্যে বিদ্যালয় পরিদর্শকদের বিষয়টি তদন্ত করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

১৮ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের (WBBPE) চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের স্বাক্ষরিত নোটিশে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, সরকারি বেতনভুক্ত শিক্ষকদের পক্ষে টিউশন (Private Tution) করানো একেবারেই নিষিদ্ধ। এই নির্দেশিকার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষকদের চাকরি হুমকির মুখে পড়তে পারে। গৃহ শিক্ষক কল্যাণ সমিতির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটি এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে এবং তারা আরও দাবি করেছে যে, এই নিয়ম মাধ্যমিক শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হওয়া উচিত।

এই নির্দেশিকা জারির পর শিক্ষা মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কিছু শিক্ষক এই সিদ্ধান্তের সমর্থন করেছেন, কারণ তারা মনে করেন, এটি শিক্ষার গুণগত মান উন্নত করতে সাহায্য করবে। আবার অন্যরা বলছেন, এটি শিক্ষকদের আয় কমাবে এবং তাদের পেশাগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবে।

অবশেষে, প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের এই কঠোর পদক্ষেপ শিক্ষার মান ও শিক্ষকদের পেশাগত আচরণ নিয়ন্ত্রণে কতটা কার্যকরী হবে, তা সময়ই বলে দেবে।
Written by Nabadip Saha.

শেয়ার করুন: Sharing is Caring!

Leave a Comment