ভোট শেষ হতেই রাজ্য সরকারি কর্মীদের (State Government Employees) জন্য বিরাট সুখবর। হাইকোর্টের (High Court) নির্দেশে তাদের বহুদিনের দাবি পূরণ (Employee Benefits) করতে বাধ্য হল রাজ্য সরকার। দীর্ঘ ১১ বছরের লড়াইয়ের পর অবশেষে আদালতে জয়লাভ করলেন রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাংশ। স্বাভাবিকভাবেই এই মুহূর্তে খুশির হাওয়া সরকারি কর্মীদের মধ্যে।
High Court Judgement favour of Govt Employees
একদিকে পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ (AICPI Dearness Allowance) দেওয়া নিয়ে রাজ্য সরকারের কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য সরকারের বিরোধিতা করেছিলেন। বহু ঝুট ঝামেলা, এমনকি আদালতের দ্বারস্থ হয়েও রাজ্য সরকারকে তারা রাজি করাতে পারেননি বকেয়া ডিএ (Arrear DA) মেটানোর জন্য। অবশেষে এবছর ভোটের আগে ফেব্রুয়ারি এবং মে মাসে ৪ শতাংশ করে ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার ঘোষণা করে রাজ্য। যাতে সরকারি কর্মীদের মোট মহার্ঘ ভাতার পরিমাণ এসে দাঁড়ায় ১৪ শতাংশে। কিন্তু এরপরেও অনেকের আক্ষেপ ছিল, “কেন্দ্র রাজ্য ফারাক সেই থেকেই গেল।”
কোন মামলায় এই রায়?
তবে অন্যদিকে এবার হাইকোর্টের চূড়ান্ত রায়ে কর্মীদের বহুদিনের দাবি পূরণে বাধ্য হল রাজ্য সরকার (State Government). তবে এই মামলার রায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মীদের (State Government Employees) নয়। পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার কিছু রাজ্য সরকারি কর্মীরা রাজ্য সরকারের আবাসন প্রকল্পে ন্যায্য মূল্যে আবাসন পাওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন রাজ্য সরকারের কাছে। সেই প্রকল্প দেরি হওয়ায় রাজ্য সরকার নির্দেশ দেয় বর্তমান মূল্যে সেই টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট নিতে হবে।
আর এর বিপক্ষে মামলা করে রাজ্য সরকারি কর্মীরা (State Government Employees). তাদের সেই দাবি রাজ্য সরকার না মানায় তারা আপিল করেন চন্ডিগড় হাইকোর্টের (Punjab and Haryana High Court) কাছে। ২০১৩ সাল থেকে সেই মামলা বিচারাধীন ছিল। সম্প্রতি এর চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করে সরকারি কর্মীদের ন্যায় বিচার পাইয়ে দিয়েছে আদালত।
আরও পড়ুন, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারী কর্মীদের ও প্রায় ৩০০০ টাকা বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা।
আদালতের রায়
স্ব অর্থায়ন কর্মচারী আবাসন প্রকল্পে আবাসন দেওয়ার জন্য ২০১০ সালে উক্ত রাজ্যের রাজ্য সরকার একটি লাকি ড্রয়ের আয়োজন করে। মোট ৮০০০ কর্মী অংশগ্রহণ করেছিল এই লটারিতে। তারমধ্যে ৩৯৩০ জনকে নির্বাচন করে ফ্ল্যাট দেওয়ার ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। সেই সময় ৩ বিএইচকে ফ্ল্যাটের দাম ছিল ৩৪.৭০ লাখ টাকা, ২ বিএইচকে এবং ১ বিএইচকের মূল্য ছিল যথাক্রমে ২৪.৩০ লাখ টাকা এবং ১৩.৫৩ লাখ টাকা। কর্মীরা মোট ৫৭ কোটি টাকা জমাও করেন আবাসন নেওয়ার জন্য এই প্রকল্পের মাধ্যমে।
কর্মীদের সুবিধা না হওয়ার কারণ
কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণ জমি না থাকায় সেই সময় আবাসন তৈরি করতে ব্যর্থ হয় রাজ্য। এরপর কেটে যায় বছরের পর বছর। এদিকে আগের রেটের তুলনায় ফ্ল্যাটের দামও বেড়ে যায় অনেক। যার কারনে সেই সব কর্মীরা ভাবেন যে এরপর ফ্ল্যাট নিতে গেলে আরো বেশি টাকা খরচ করতে হবে তাদের। তাই শেষে রাজ্য সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে 2013 সালে চন্ডিগড় হাইকোর্টে (Punjab and Haryana High Court) এসে মামলা করেন কর্মীরা। দাবি ছিল ২০০৮ সালের দর অনুযায়ীই ফ্ল্যাট প্রদান করতে হবে তাদেরকে। অর্থাৎ বলা যায়, এককালীন বিরাট অংকের অর্থলাভ হলো রাজ্য সরকারি কর্মীদের। কারণ বর্তমানে সেই ফ্ল্যাটের দাম প্রায় দ্বিগুন হয়ে গিয়েছে।
এতদিন সেই মামলার কোন সদগতি না হলেও বর্তমানে চন্ডিগড় হাইকোর্ট এর চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেছে। বিচারপতি ললিত বাত্রা এবং সুরেশ্বর ঠাকুরের ডিভিশন বেঞ্চ কর্মীদের আরজি মঞ্জুর করে জানিয়েছে, “যারা স্ব অর্থায়ন কর্মচারী আবাসন প্রকল্পে আবেদন করেছিলেন তাদেরকে ২০০৮ সালের ব্রোশিওরের রেট অনুযায়ীই ফ্ল্যাট প্রদান করা হবে। বর্তমানে ফ্ল্যাটের দাম বাড়লেও কোনো অতিরিক্ত মূল্য চোকাতে হবে কর্মীদের ফ্ল্যাট কিনতে।”এই রায় মারফত বেশ খুশি সেই সব কর্মচারীরা।
সরকারি কর্মীদের আরও খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন।
Written by Nabadip Saha.