মিড ডে মিলে (Mid Day Meal) এখন প্রধানমন্ত্রী পোষণ স্কীম (PM Poshan Scheme). কেন্দ্রের নতুন মোড়কের পুরনো স্কীম কে সফল করতে কাল ঘাম ছুটছে রাজ্য তথা শিক্ষকদের। আর এই স্কীমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে স্কুলের ভেতরে সাক্সব্জি চাষ করে সেগুলো রান্নায় ব্যাবহার করা। আর এবার লিখিত আকারে নিরদেশিকা দেওয়া হচ্ছে শিক্ষকদের। পড়ুয়াদের খাবারের দিকে নজর দেওয়ার জন্য শিক্ষা দপ্তরের তরফে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে।
এমনিতেই মিড ডে মিলে (Mid-Day-Meal) যা বরাদ্দ, তা বর্তমানে বাজারদরের তুলনায় যথেষ্টই কম বলে অনেকেই জানান। সেই বরাদ্দের মধ্যেই মিড ডে মিল চালিয়ে যেতে হয়। তবে এর মধ্যে Mid Day Meal এর ছোট ছোট পড়ুয়াদের খাবারের পাতে যাতে একটু বৈচিত্র আনা যায়, মাংস, ফল, ডিম দেওয়া যায়, সেই উদ্যোগও শুরু হয়েছে। এবার রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরের তরফে মিড ডে মিলের পড়ুয়াদের খাবারে নজর দেওয়ার লক্ষ্যে সেই সমস্ত স্কুলগুলিতে কিচেন গার্ডেন (Mid Day Meal Kitchen Garden) তৈরির কথা বলা হয়েছে।
Mid Day Meal এর নির্দেশিকাঃ
স্কুলগুলোতেই যদি শাকসবজি চাষ করা যায়, তাহলে পড়ুয়াদের Mid Day Meal এ খাবারের পাতে বিভিন্ন সময়ে রকমারি তরকারি দেওয়া যেতে পারে। ফলে খাবারের মধ্যে বৈচিত্র আসবে। পাশাপাশি, পড়ুয়াদের পুষ্টির দিকটিতেও নজর দেওয়া যাবে। কিচেন গার্ডেন তৈরির নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে সরকারের তরফে। তবে শিক্ষা দপ্তরের এই নির্দেশ দেওয়ার পরে প্রশ্ন উঠেছে, কলকাতা সহ বহু শহরাঞ্চলের স্কুলগুলিতে জায়গা তুলনামূলকভাবে অনেক কম।
বহু স্কুল আবার ভাড়া বাড়িতে চলে। সেক্ষেত্রে সেই সমস্ত স্কুলে কিভাবে বাগান তৈরি করে শাক সবজির চাষ করা যাবে, আর যদি সেটা না করা যায়, তাহলে যে সমস্ত স্কুল কিচেন গার্ডেন তৈরি করে শাকসবজির চাষ করবে তাদের পড়ুয়ারা বিভিন্ন ধরনের সবজির তরকারি পাবে। আবার যারা এই চাষ করতে পারবেনা, তাদের পড়ুয়াদের পাতে সেই খাবার দেওয়া সম্ভব হবে না। আর এই সমস্যা থেকেই Mid Day Meal এর বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি উঠেছে।
এই প্রসঙ্গে শিক্ষকরা জানাচ্ছেন, বর্তমানে প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়াদের জন্য মিড ডে মিল বাবদ মাথাপিছু ৫ টাকা ৪৫ পয়সা করে বরাদ্দ রয়েছে। উচ্চ প্রাথমিক অর্থাৎ অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত মিড ডে মিলে মাথাপিছু ৮ টাকা ১৫ পয়সা বরাদ্দ রয়েছে। আবার সম্প্রতি একজন পড়ুয়ার জন্য প্রতি ১৬ সপ্তাহ হিসাবে ৩২০ টাকা দেওয়া হচ্ছে। তার অর্থ প্রতি সপ্তাহে ২০ টাকা করে একজন পড়ুয়া পিছু দেওয়া হচ্ছে। এই টাকার মধ্যেই মাংস, ফল, ডিম বরাদ্দ করতে হচ্ছে। সেই জায়গায় কিচেন গার্ডেন তৈরি করে শাক সবজির চাষ করলে সেটা যথেষ্টই ভালো হবে। পড়ুয়ারাও নিজের স্কুলের বাগানে তৈরি শাকসবজি তাদের খাবার পাতে পাবে। কিন্তু কলকাতা সহ শহরের স্কুলগুলিতে জায়গার অভাব। সেক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হবে।
কলকাতার বউবাজারে গলির মধ্যে রয়েছে জনসেবক স্কুল। এই স্কুলের শিক্ষিকা জানালেন, আমাদের স্কুলের মধ্যে কিচেন গার্ডেন তৈরির একটুও জায়গা নেই। ফলে তাতে আমাদের সমস্যা হবে। যাদবপুরের স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবার বললেন, কিচেন গার্ডেন তৈরি করে শাক সবজির চাষ করতে পারলে ভালো হবে। তবে জায়গার বড় অভাব। সেক্ষেত্রে দেখতে হবে টবে গাছ বসিয়ে চাষ করা যায় কিনা।
আরও পড়ুন, RBI এর নিয়ম না মানায়, মহা বিপদে 6 টি ব্যাংক। এই ব্যাংকে আপনার একাউন্ট নেই তো?
তবে কলকাতার আবার বেশ কিছু স্কুল রয়েছে, যারা এরকম কিচেন গার্ডেন তৈরি করে নিজের স্কুল চত্বরের মধ্যেই শাকসবজি চাষ করতে পারছে। সন্তোষপুরের ঋষি অরবিন্দ বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা জানালেন, তাদের স্কুলের ছাদের বাগানে শীতকালে ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন চাষ হয়েছে। গরমকালে পটল, ঢেঁড়স চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রত্যেক পড়ুয়া পাবে 36 হাজার টাকার স্কলারশিপ। আবেদন প্রক্রিয়া জেনে রাখুন।
এই প্রসঙ্গে বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, Mid Day Meal এ এমনিতেই বরাদ্দ যথেষ্ট কম। তার উপরে তিন মাসের জন্য যে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে, তাতেই মাংস, ফল, ডিম দিতে হচ্ছে। পড়ুয়াদের মিড ডে মিলের বরাদ্দ ২০ টাকা করে মাথাপিছু করা উচিত। বরাদ্দ বাড়ানো উচিত। যে সমস্ত স্কুল কিচেন গার্ডেন তৈরি করে নিজেদের স্কুল চত্বরেই শাকসবজি চাষ করতে পারবে, তাদের পড়ুয়ারা ভালো মেনু পাবে। আবার যে সমস্ত স্কুল সেটা করতে পারবেনা, সে ক্ষেত্রে তাদের পড়ুয়াদের খাবার পাতে সমস্ত তরকারি পাওয়া যাবে না। তার থেকে Mid Day Meal এর জন্য পড়ুয়াদের মাথাপিছু টাকা বরাদ্দ বাড়ানো উচিত।
Written by Rajib Ghosh.