West Bengal Education – রাজ্যের সমস্ত স্কুলে বিদেশী স্টাইলে পড়ানোর নির্দেশ, ঠিক কি কি পরিবর্তন হচ্ছে দেখে নিন।

অতিমারী পর্ব টানা দুই বছর পড়াশোনার তাল কেটেছে। তাই নতুন ছন্দে স্কুলের চেহারা ফেরাতে চাইছে West Bengal Education Department. আর সেই জন্যই ইতিমধ্যে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার। আর ২রা জানুয়ারী থেকে প্রতিদিন একেক কর্মসূচী পালন করে পড়ুয়াদের শিক্ষার প্রতি আরও আগ্রহ সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছে। আর সেই কাজ গুলো শিক্ষকেরা করছেন কিনা তা যাচাইয়ের জন্য প্রতিদিন কোনও না কোনও স্কুল ভিজিট করছেন বিদ্যালয় পরিদর্শকেরা, যদিও সমস্ত স্কুল একসাথে ভিজিট করা সম্ভব নয়, তাই প্রতিটি প্রোগ্রামের ভিডিও অথবা ছবি তুলে শিক্ষকদের পাঠাতে হচ্ছে। আর এবার West Bengal Education Department এর আরও একটি নতুন নির্দেশিকা এলো।

13 guidelines from West Bengal Education Department:

উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে এতদিন যে নিয়ম পালন করা হতো, এবার থেকে তা বিদ্যালয়স্তরেও পালিত হবে নির্দেশ West Bengal Education Department এর। সাধারণত কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের সফল ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠান এর আয়োজন করা হয়। এই ধরনের সেরিমনি প্রচলিত রয়েছে একমাত্র উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রেই। এছাড়া এবছর থেকে প্রতিবছর দুইবার CCE ও রেগুলার শিক্ষক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। তাছাড়া যে সমস্ত শিক্ষক DElEd পাশ করতে পারেন নি, তাদের আবার ট্রেনিং হবে।

তবে এবার রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দপ্তর থেকে নির্দেশিকা পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে (WBBSE). সেখানে বলা হয়েছে, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো যেভাবে সফল ছাত্র-ছাত্রীদের সম্মান জানানোর অনুষ্ঠান বা সেরিমনির প্রচলন রয়েছে West Bengal Education Department, এই একই পদ্ধতিতে এবার থেকে স্কুলে এক ক্লাস থেকে আরেক ক্লাসে ছাত্রছাত্রীরা উত্তীর্ণ হলেই তাদের নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে সম্মান জানাতে হবে।

ইতিমধ্যেই রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দপ্তর এই বিষয়ে ১৩ দফা গাইডলাইন (West Bengal Education Department Guideline from book day to 15th January) তৈরি করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে জানিয়ে দিয়েছে। এর ফলে একদিকে যেমন উত্তীর্ণ হওয়া ছাত্র ছাত্রীরা এই সম্মান জানানোর পদ্ধতির মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হবে, ঠিক সেই ভাবে নতুন ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে প্রধান শিক্ষক এবং ক্লাস টিচারদের একটা সুসম্পর্ক গড়ে উঠবে।

যার প্রভাব স্কুলের শিক্ষা ব্যবস্থায় পড়বে। আর তার ফলে স্কুল শিক্ষা ব্যবস্থার মান উন্নয়ন হবে। এবার দেখে নেওয়া যাক, রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দপ্তর (West Bengal Education Department) থেকে যে ১৩ দফা গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে, সেখানে বিস্তারিতভাবে কি জানানো হয়েছে:
১. প্রতিবছর ২ জানুয়ারি বা তার পরের দিন কয়েকের মধ্যেই এই সেরিমনির (Ceremony) অনুষ্ঠান সমস্ত বিদ্যালয়ে করতে হবে।

২. এক ক্লাস থেকে আরেক ক্লাসে উত্তীর্ণ হওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলের প্রধান শিক্ষক সম্মান জানাবেন।
৩. ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে চকলেট, মিষ্টি দিয়ে স্বাগত জানাবেন বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক।
৪. নতুন ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস টিচার স্বাগত জানাবেন।
৫. এক ক্লাস থেকে আরেক ক্লাসে উত্তীর্ণ হওয়া ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাস টিচারকে তাদের পরিচয় বলবেন।

মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য বিরাট সুযোগ করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী, সবাই খুব খুশি।

৬. স্কুলের প্রধান শিক্ষক/ সহকারী প্রধান শিক্ষক/ ক্লাস টিচাররা ছাত্র-ছাত্রীদের সেই বিদ্যালয়ের ইতিহাস সম্পর্কে জানাবেন। এই ছাড়া ইউনিফর্ম, বই, জুতো, স্কুলব্যাগ বিতরণ করা হবে।
৭. প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর করা ধন্যবাদ জ্ঞাপক চিঠি সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের দিতে হবে। এরপর মুখ্যমন্ত্রীর স্বাক্ষরিত নতুন বছরের শুভেচ্ছা পত্র সমস্ত পড়ুয়াদের হাতে তুলে দিয়ে সেই ছবি তুলে রিপোর্ট পাঠাতে হবে।
৮. স্কুলের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ফটো কর্নার (Photo Corner) রাখতে হবে। সেই ফটো কর্নারে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের ছবি, জন্ম তারিখ সহ বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া থাকবে। তার সাথে প্রত্যেক ক্লাসের শ্রেণী শিক্ষক ও পড়ুয়ারা একটি গ্রুপ ফটো তুললে সেই বোর্ডে টাঙিয়ে রাখবেন। সেই ঘরের ছবি West Bengal Education Department এ পাঠাতে হবে।

৯. নবাগত ছাত্র ছাত্রীদের সঙ্গে ক্লাস টিচার ছবি তুলবেন এবং সেই ছবি ফটো কর্নারে লাগাতে হবে।
১০. এই সময়সীমার মধ্যে স্কুলের ক্লাস মনিটর (Class Monitor) স্পোর্টস মনিটর( Sports Monitor) কালচারাল মনিটর (Cultural Monitor) এবং মিড ডে মিল মনিটর বা মিড ডে মিল ক্যাপ্টেন (Mid Day Meal Monitor) নির্বাচিত করতে হবে।
১১. গ্রুপ লার্নিং (Group Learning) এর ব্যবস্থা করতে হবে।

banglarshiksha pottal (বাংলার শিক্ষা পোর্টাল)

১২. বিদ্যালয়ের এই অনুষ্ঠান তথ্যচিত্র আকারে তৈরি করতে হবে। প্রতিবছর অনুষ্ঠানের ছবি সহ বুকলেট আকারে প্রকাশ করতে হবে। এছাড়া এই প্রোগ্রাম গুলো স্কুলের ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হবে।
১৩. বিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে এমনভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের বসার ব্যবস্থা করতে হবে যাতে পঠন পাঠনের ক্ষেত্রে সুবিধা হয়। মাঝে মাঝে সমস্ত পড়ুয়াদের বসার যায়গা পরিবর্তন করতে হবে। যাতে সকলে সামনে বসার সুযোগ পায়।

জানুয়ারীর দ্বিতীয় সপ্তাহে শিক্ষকদের কি কি করতে হবে, লিস্ট দিলো শিক্ষা দপ্তর

রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দপ্তরেরর (West Bengal Education Department) তরফে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে এই ১৩ দফা গাইডলাইন জারি করার নির্দেশিকা ইতিমধ্যেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। উচ্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে এই সেরিমনির প্রচলন থাকলেও বিদেশের বেশ কিছু স্কুলে এই ধরনের উত্তীর্ণ হওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের সম্মান জানানোর অনুষ্ঠানের প্রচলন রয়েছে। এবার রাজ্য সরকারের তরফে সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
Written by Rajib Ghosh.

শেয়ার করুন: Sharing is Caring!

Leave a Comment